ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক একীভূতকরণ

পাহাড়সম ঋণের বোঝা নিয়ে ডুবন্তপ্রায় ব্যাংকিং খাতকে পুনর্গঠন করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ফেরাতে বিভিন্ন মেগাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে এবং ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে আর্থিক জালিয়াতির বিষয়টি উঠে আসার পরপরই ৩০ আগস্ট ২০১৯ তারিখে ভারতের ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক একীভূত হয়ে ১২টি ব্যাংকে পরিণত করার ঘোষণা দেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ব্যাংক একীভূতকরণ প্রসঙ্গে সীতারমণ বলেন, ভারতের অর্থনীতিকে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করতে ও একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই নতুন এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি প্রতিটি ব্যাংককে ঝূঁকি ব্যবস্থাপক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন। একীভূত করার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাংকগুলোর উপস্থিতি আরও বাড়বে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন ভারতের অর্থমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় দফার সরকারের ব্যাংক খাত সংস্কার ও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের সংখ্যা কমানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক একীভূত করার এই উদ্যোগ নেয়া হয়। এসব একীভূতকরণ এর আগে দেনা ব্যাংক, বরোদা ব্যাংক ও বিজয়া ব্যাংকের সংযুক্তিকরণের মতোই মসৃণ হবে। কোনো কর্মী ছাঁটাই হবে না বলেও আশ্বস্থ করেছেন ভারতের অর্থ সচিব রাজীব কুমার।
বেশ কিছু সংযুক্তিকরণের ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের সংখ্যা ২৭ থেকে কমে হবে ১২। এর মধ্যে ১০টি বড় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক মিশে হয়ে যাচ্ছে ৪টি। ওরিয়েন্টাল ব্যাংক অব কমার্স ও ইউনাইটেড ব্যাংক নয়াদিল্লি ভিত্তিক পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে একীভূত হচ্ছে। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) পর এটা হবে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক। নতুন এই ব্যাংকটি পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ে আকারে প্রায় দেড় গুণ বড় হবে। ব্যাংকটির মূলধন হবে প্রায় ১৭ দশমিক ৯৫ লাখ কোটি রুপি। দক্ষিণ ভারতের কানাড়া ব্যাংক ও সিন্ডিকেট ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। মিশে যাচ্ছে ইউনিয়ন, অন্ধ্র ও করপোরেশন ব্যাংক। এলাহাবাদ ব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে ইন্ডিয়ান ব্যাংক।