অগ্রণী ব্যাংকের ১৪তম এজিএম অনুষ্ঠিত
অগ্রণী ব্যাংকের ১৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ অক্টোবর ২০২১ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন পর্ষদ চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখ্ত সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মফিজ উদ্দীন আহমেদ, কাশেম হুমায়ূন, ড. মো. ফরজ আলী, কেএমএন মঞ্জুরুল হক লাবলু, খোন্দকার ফজলে রশিদ, তানজিনা ইসমাইল, মো. শাহাদাৎ হোসেন, এফসিএ, পর্যবেক্ষক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক একেএম ফজলুর রহমান, সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্লাহ হারুন পাশা এবং অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম। সভায় ২০২০ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদিত হয়। এছাড়া ২০২১ সালের জন্য ব্যাংকের বহিঃনিরীক্ষক হিসেবে এ কাশেম এন্ড কোং এবং মের্সাস মশিহ মুহিত হক এন্ড কোং ফার্মদ্বয়ের নিয়োগের বিষয় অনুমোদিত হয়।
সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম ২০২০ সালে ব্যাংকের সাফল্য গাঁথা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা তুলে ধরেন। আমানতে লাখ কোটি টাকা ক্লাবের মাইলফলক অতিক্রম করা, পদ্মা সেতুতে বৈদেশিক মুদ্রার একক যোগানদাতা, রেমিট্যান্স আহরণে ব্যাংকিং ক্ষেত্রে দ্বিতীয়, সবুজ অর্থায়নে শীর্ষে অবস্থান করা অগ্রণী ব্যাংক প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নেও শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখার বিষয়ে তিনি বিশদ বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, ২০২০ সালে ব্যাংকের মোট সম্পদ ২০১৯ সালের তুলনায় ২৩ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা বা ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ৩১০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। ব্যাংকের মোট সম্পদের মধ্যে সুদবাহী সম্পদের পরিমাণ ৫৯ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা যা মোট সম্পদের ৫৫ শতাংশ। ২০২০ সালে ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকায় যা ২০১৯ সালে ছিল ৪৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা। ২০২০ সালে ঋণ ও অগ্রিমের মধ্যে নিয়মিত ঋণের পরিমাণ ৮৮ শতাংশ যা রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বছরে ঋণ-আমানত অনুপাত ছিল ৫৬.৩৪ শতাংশ। ২০১৯ সালে আমানতের পরিমাণ ছিল ৬৯ হাজার ২২৪ কোটি টাকা যা ২০২০ সালে ২২ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ হাজার ১৯৯ কোটি টাকায়। এক্ষেত্রে ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি ঘটে ৩৩ শতাংশ। ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডার ইক্যুইটির পরিমান ৪ হাজার ২০৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের রিটার্ন অন ইক্যুইটি হল ১.৪৯ শতাংশ। ২০২০ সালে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৪৩ কোটি টাকা এবং মোট পরিচালন আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫০১ কোটি টাকায়। বৈদেশিক রেমিট্যান্স আহরণের ক্ষেত্রে ব্যাংক পূর্ববর্তী বছরগুলোর ন্যায় এ বছরেও রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম স্থান এবং সকল ব্যাংক সমূহের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে। ২০২০ সালে ব্যাংক ২১ হাজার ১৪ কোটি টাকা বৈদেশিক রেমিট্যান্স আহরণ করেছে যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৬ হাজার ১৫১ টাকা বা ৪১ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালে মোট আমদানির পরিমাণ ২৪ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা এবং মোট রপ্তানির পরিমান ১০ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা।। ব্যাংকিং খাতে শ্রেণীকৃত ঋণ বৃদ্ধি পাওয়া সত্তেও অগ্রণী ব্যাংক শ্রেণীকৃত ঋণের লাগাম টানতে সক্ষম হয়েছে। ২০২০ সালে শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ ৩ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে যা ২০১৯ সালে ছিল ৬ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। মোট ঋণ ও অগ্রিমের তুলনায় শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ ১২.৪৬ শতাংশ যা ২০১৯ সালে ১৪.২৬ শতাংশ ছিল। ২০২০ সালে শ্রেণীকৃত ঋণ হতে আদায় করেছে ৯৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে নগদ আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১৮ কোটি টাকা অবলোপনকৃত ঋণ হতে পরিমান ছিল ৪৯ কোটি টাকা।
সভায় চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখ্ত ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করে ভবিষ্যৎ এ এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন। সভায় আরো সংযুক্ত ছিলেন ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম ও মহাব্যবস্থাপকবৃন্দ।